তাহিরপুর প্রতিনিধি :
বিদ্যালয় বন্ধের কোনো কারন ছিলো না, পূর্ব ঘোষিত কোনো নোটিশও ছিলো না বন্ধের,ছিলো না কোনো সরকারী ছুটি এরপরও সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জাতীয় পতাকা উত্তোলন অবস্থায় সারাদিন স্কুলের গেইটসহ প্রতিটি দরজা তালা বদ্ধ ছিলো। স্কুলে ছিলোনা কোন শিক্ষক শিক্ষার্থী । স্থানীয় বাসিন্দারাও জানেন না কেন বিদ্যালয় বন্ধ। এনিয়ে অভিবাবক মহলে চরম ক্ষোব বিরাজ করছে।
এ ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার(০৭ অক্টোবর) সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়দল উচ্চ বিদ্যালয়ে। আসাদুজ্জামান মুন্না নামে এক ব্যক্তি ফেসবুক আইডি থেকে স্কুল বন্ধের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পরার পর সামনে আসে ঘটনাটি।
ওই ভিডিওতে তিনি বলেছেন, দুপুর ১২ টা বাজে কোনো শিক্ষক নেই, নেই কোনো শিক্ষার্থী তবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। কি কারনে স্কুল বন্ধ তা জানা নেই । স্কুলের গেইট ও দরজায় তালা দেয়া।
ছড়িয়ে পরা ভিডিওতে অনেকেই কমেন্টস করেছেন। কেউ কেউ আবার প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চাইছেন।
স্থানীয়দেরর সাথে কথা বলে জানা যায়, বড়দল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাহাড়,আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে প্রভাব বিস্তার করে নিয়মিত স্কুলে আসতেন না,কারন উনার বাড়ি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায়। এছাড়াও নানান অনিয়মের সাথে জড়িত থেকে তিনি নিজেকে ক্ষমতাধর মনে করতেন। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নিজেকে রক্ষায় বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতা কর্মীদের সাথে আতাত শুরু করেছেন তিনি।
এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তাহিরপুর উপজেলায় ছিলাম। জাতীয় জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সেখানে আমিসহ একজন শিক্ষক ছিলাম। আমার বিদ্যালয়ের কয়েক জন শিক্ষার্থী খেলায় অংশ গ্রহণ করে পুরস্কার পেয়েছে। কর্তৃপক্ষ আমাকে শোকজ করেছেন৷ আমি তাদেরকে দ্রুতই জবাব দিবো।
এবিষয়ে বড়দল উচ্চ বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য ও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি বশির আহমেদ বলেন, ওইদিন উপজেলায় বিদ্যালয়ের খেলা ছিল। আমি, প্রধান শিক্ষকসহ আরও ২ জন শিক্ষক তাহিরপুরে কিছু ছাত্র নিয়ে খেলায় ছিলাম। কিন্তু স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা সাড়ে ১২ টার সময় স্কুল ছুটি দিয়ে চলে গিয়েছিল। তাই স্কুল বন্ধ ছিল। আসলে একটি ভুল করে ফেলেছে। আপনারা যদি ক্ষমার দৃষ্টিতে না দেখন তহলে কি ভুলের সমাধান হবে।
এই বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমে শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আমিও শুনেছি একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ হয়েছে বড়দল উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। যার কারণে প্রধান শিক্ষকে শোকজ করা হয়েছে। এবং ৩ কর্মদিবসে মধ্যে উপযুক্ত জবাব দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। যদি উপযুক্ত জবাব দিতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও জানান বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রদের নিয়ে একজন শিক্ষক খেলায় অংশ গ্রহণ করলেও স্কুলে ৮জন শিক্ষক কর্মরত আছেন ১জন আসলেও আরো ৭ জন শিক্ষক বিদ্যালয়ে থেকে পাঠদান করানোর কথা। বিদ্যালয় বন্ধ রাখার কোন কারন নেই।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম জানান,স্কুল বন্ধ রাখার কোনো কারন নেই। এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান,এই বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে দেখছি কেন স্কুল বন্ধ রাখা হল।